নিজেকে এগিয়ে রাখুন। কে না চায় অন্যদের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে। কিন্তু অনেকেই এগিয়ে রাখার জন্য যা করতে হবে তা জানেন না বা জানার চেষ্টাও করেন না। অবশ্যই নিজেকে এগিয়ে রাখতে কিছু টেকনিকের মধ্য দিয়ে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করে নিতে হয়। এমন অনেক মানুষ আছে যারা স্বপ্ন দেখতেও ভয় পায়। শুধু অন্যদের সফলতা দেখে হিংসা করেন এবং নিজেদের গুটিয়ে রাখেন। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সফলতাকে আলিঙ্গন করেন। নিজেকে এগিয়ে রাখুন ২১টি উপায়ে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠুন
আপনি দিনে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না? অধিকাংশের উত্তর হবে না। কারণ অনেকেই দেরিতে ঘুম থেকে উঠেন। তাই ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে অন্যদের আগে আপনার দিন শুরু হবে। দিনের শুরুতেই আপনি অনেকের থেকে এগিয়ে থাকলেন। অর্থাৎ অন্যদের দিন শুরু হওয়ার আগেই আপনার দিন শুরু হলো। এতে আপনি এক্সট্রা কর্ম ঘন্টা পেয়ে গেলেন। আর এভাবেই নিজেকে এগিয়ে রাখুন। বেশির ভাগ মানুষই দেরিতে ঘুম থেকে উঠার কারণে কাজ করার জন্য কম সময় পান।
সারাদিনের কাজের প্রস্তুতি নিন
সকালেই আপনার কাজের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কর্মতালিকা প্রস্তুত করে নিন। অর্থাৎ সারাদিন আপনার কি কি কাজ রয়েছে তা লিখে ফেলুন টাস্কলিস্টে। অনেক সময় মনে না থাক্র কারণে অনেক কাজই বাদ পরে যায়। যদিও টাস্কলিস্ট বা কর্ম তালিকা অনেক রাতেও প্রস্তুত করে রাখে। এতে আপনার দিনের কাজগুলো গোছালোভাবে করা সম্ভব হয়। এই কাজ গুলো সকালেই করে রাখলে সারাদিনের কাজে বাড়তি চাপ থাকে না।
শরীর চর্চা করুন
শরীর চর্চা করার প্রয়োজনীয়তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু মানি কী? অধিকাংশের এ প্রশ্নের উত্তর হবে না! সত্যি খুউব কম মানুষই শরীর চর্চার জন্য বাড়তি সময় দেন। আর এটা করতে না পারার অন্যতম কারণ হচ্ছে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা। ঘুম থেকে উঠেই সবাই কাজে লেগে যান। ফলে শরীর চর্চায় সময় দিতে পারেন না। ভোরে ঘুম থেকে উঠে শরীর চর্চা করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। যা আপনাকে অন্যদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে রাখে। এ উপায়েও নিজেকে এগিয়ে রাখুন।
কোন কাজ ফেলে রাখবেন না
কোন কাজই অন্য সময়ের জন্য কখনই ফেলে রাখবেন না। পরবর্তীতে করবো ভেবে আমরা অনেক কাজ ফেলে রাখি। এতে অনেক কাজ একসাথে জমে যায়। যেটা পরবর্তীতে আমাদের পীড়া দিয়ে থাকে। তাই কাজ ছোট হোক বা বড় হোক, অবশ্যই সময়ের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করার চেষ্টা করুন। অনেকেই হাতে অফুরন্ত সময় থাকা সত্ত্বেও কাজ ফেলে রাখি। কিন্তু সফল মানুষেরা কাজ কখনই ফেলে রাখেন না। আর এভাবেই সময়ের কাজ সময়ের আগে শেষ করেও আপনি নিজেকে এগিয়ে রাখুন।
লক্ষ্য স্থির করুন
সফল মানুষেরা লক্ষ্য স্থির করেই তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। তাই আপনার লক্ষ্য স্থির করা খুবই জরুরি। আমাদের মধ্যে অনেকেরই ক্যারিয়ার শুরুর আগে বা কোন কাজ শুরুর আগে লক্ষ্য স্থির না করার প্রবণতা রয়েছে। আর এই ভুল ব্যর্থ বা অসফল মানুষদের ক্ষেত্রেই বেশি হয়ে থাকে। আপনার লক্ষ্য যদি স্থিরই না থাকে তবে যেমন আপনার সফলতা লাভের চান্স কম; তেমনি ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ জিরো। কারণ আপনার জীবনের কোন লক্ষ্যই নাই। তাই তা পূরণের বাড়তি পরিশ্রম বা চেষ্টাও নেই। তাই নিজের সঠিক লক্ষ্য স্থির করেও নিজেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে পারেন।
ঝুঁকি নিন
নিজের বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়ে ঝুঁকি নিতে হবে। কারণ সফলতা সহজে অর্জনের কোন বিষয় নয়। এজন্য ঝুঁকি নিতে হবে। হ্যাঁ, ঝুঁকি নিয়ে আপনি সব সুয় সফল হবেন বিষয়টা এমন নয়। তবে ঝুঁকি নেওয়ার পর আপনার ব্যর্থতার কারণগুলো সনাক্ত করে সেখান থেকেও শিক্ষা নিতে পারেন। ঝুঁকি সব সময় বড় হবে এমন নয় ছোত ঝুঁকিও হতে পারে। আর সফল মানুষেরা কখনই এভারেজ হয় না। যারা নিজেদের অন্যভাবে দেখতে চান। তাই নিজেকে তৈরি করার জন্য অবশ্যই ঝুঁকি নেওয়ার মানুষিকতা থাকতে হবে।
অভিযোগ করবেন না
কোন বিষয়ে অভিযোগ করবেন না। এতে সময়ের অপ্রচয় হয়। তাই অভিযোগ না করে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাই অন্যের কাজের সমালোচনা থেকে বিরত থেকে নিজের কাজ যথাযথভাবে করতে শিখুন। মনে রাখবেন সফল মানুষেরা অভিযোগ না করে কাজটি করে দেখিয়ে দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। কারো কোন কাজ ভুল মনে হলে তার সমালোচনা না করে সংশোধন করার চেষ্টা করুন।
স্বপ্ন দেখুন বড়
অধিকাংশ মানুষ স্বপ্ন দেখেন ছোট। বড় স্বপ্ন দেখুন এবং ভাবতে থাকুন এটা বাস্তবেও অর্জন করা সম্ভব। তাই নিজেকে এগিয়ে রাখতে চিন্তাশক্তিকে বড় করতে হবে। কিন্তু যারা সফল তারা স্বপ্নের থেকেও বড় চিন্তা করেন। নিজেকে ছোট ভেবে কখনই ছোট ছোট স্বপ্ন দেখবেন না। নিজের সম্পর্কে পজিটিভ চিন্তা বাড়ান। নিজেকে কখনোই ছোট ভাববেন না। দেখবেন চিন্তায় এগিয়ে থাকা মানুষগুলো বাস্তবেও এগিয়ে থাকে।
জীবনের একটি শখ রাখুন
কর্ম ব্যস্ত জীবনে ক্লান্তি আসে, একটা সময় কাজের প্রতি অবসাদ চলে আসে। তাই জীবনের একটি শখের কাজ রাখুন। সুযোগ পেলেই শখ পূরণ করুন। সেটা আপনার চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।তাই নিজেকে সময় দিন এবং নিজের সখ পুরণ করুন। এতে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়বে। পূর্ণ উদ্যমে কাজ করার শক্তি পাবেন।
নতুন কিছু শিখুন
আমরা সাধারণত অ্যাকাডেমিক জীবন শেষ হলেই কোন কিছু শিখতে চাই না। কিন্তু আমাদের শিক্ষার পিছনে সারা জীবন ছুটে চলা উচিৎ। সফল ব্যক্তিরা আজীবন শিক্ষার্থী। কোনও বিষয়ে জানতে এবং দক্ষতা অর্জন করতে তারা প্রাণপণ ছুটে চলেন। সফল মানুষেরা এভাবেই নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের এগিয়ে রাখেন। কিন্তু সাধারণেরা নতুন কোন বিষয়ে জানতে বা দক্ষতা অর্জন করতে ভয় পান। নিজদের গুটিয়ে রাখেন সবসময়।
- আরও দেখতে পারেনঃ স্কিল ডেভেলপমেন্টের ৭ পরামর্শ
না বলতে শিখুন
‘না’ বলার ক্ষমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। অনেকের ধারণা যে বিজয়ীরা সর্বদা ‘হ্যাঁ’ বলেন। কিন্তু সত্যি এটাই যে ‘না’ বলতে পারলে অনেক অহেতুক ঝামেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা যায়। কারণ এমন অনেকেই আছেন যারা কেউ সহযোগিতা চাইলে কাজটি করার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও ভদ্রতার খাতিরে না করতে পারেন না। এভাবে নিজের ব্যক্তিগত সময় কমে যায়। তাই অবাঞ্চিত যে কোন কিছুকেই না বলতে শিখুন।
সময়কে কাজে লাগান
আপনি অনেক সম্পদ অর্জন করতে পারনে। নতুন চাকরি বা অনেক বন্ধুও পেতে পারেন। কিন্তু আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া সময় আর কখনই ফিরে পাবেন না। তাই সময়কে কাজে লাগান। আপনি ভাওতেও পারবেন না কত সময় আপনি অযথা নষ্ট করে ফেলেছেন। তা সামনে যে সময় আছে তা স্বার্থক করে তুলুন। অনেক কিছুই হারিয়ে ফিরে পাওয়া গেলেও হারিয়ে যাওয়া মহামূল্যবান সময় আপনার জীবোণে আর ফিরে আসবে না। তাই আবার বলছি, আপনার সময়কে কাজে লাগান, এটা আপনার বড় সম্পদ।
কাল নয় আজই করুন
কোন কাজই কালকের জন্য ফেলে রাখবেন না। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর অভ্যাস তাই যা আপনি প্রতিদিন করতে অভ্যস্ত। তাই কোন ভালো চিন্তা বা কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখবেন না। ডু ইট টুডে।
অন্যকে সাহায্য করুন
অন্যকে সাহায্য করার শক্তি কখনই হারাবেন না। জীবনে অন্যকে সাহায্য করার মানসিকতা রাখুন। দেখবেন অন্যরাও আপনার বিপদে সাহায্য করবে। আর একাজের মধ্যে প্রশান্তি পাবেন। বলা যায় না, কখন আপনার অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হবে।তাই যথাসাধ্য অন্যকে সাহায্য করুন।
সিদ্ধান্ত নিন
নিজের বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিন। কারণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ বারবার আসে না। আপনি চাইলেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবেন না। তাই নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কখনই লজ্জা পাবেন না। ভুল সিদ্ধান্ত আপনি নিতেই পারেন। তবে সেখান থেকে শিক্ষা নিন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। সিদ্ধান্তহীনতার কারণে অনেক বড় সুযোগ নষ্ট হয়। সিদ্ধান্ত না নিতে পারা এক ধরণের বোকামি।
ভুল থেকে শিক্ষা নিন
ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার মত বড় শিক্ষা আর নাই। কারণ আমরা যখন ভুল করি তখন ভুলের পেছনে অবশ্যই কিছু কারণ থাকে। তাই বারবার ভুল না করে পূর্বের ভুল থেকে শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা নিয়ে পরবর্তী কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন। তাই ভুল করে হতাশ না হয়ে ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শক্তি সঞ্চার করুন। মনে রাখবেন, প্রতিটি ভুলই নতুন জ্ঞানের দিকে পরিচালিত করে। তবে ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না।
সফলতার জন্য অপেক্ষা নয়
সফলতা কখন আসবে তার জন্য অপেক্ষা না করে তা অর্জন করুন। সফলতা পাওয়ার জন্য যে পরিমাণ শ্রম ও মেধা দরকার তা কাজে লাগান। মনে রাখবেন, আপনার সফলতা আপনাকেই অর্জন করতে হবে। সফলতা নিজেই এসে আপনার কাছে ধরা দেবে না। সফল ব্যক্তিরা কখনই কোন কিছুর অপেক্ষা করে না। তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই তৈরি করেন।
অন্যকে শুনুন
কখনও কখনও নিজেকে থামাতে হবে; অন্যকে শোনার জন্য। অন্যরা আপনাকে কি বলতে চায় তা মন দিয়ে শুনুন। সেটা হতে পারে ভালো অথবা মন্দ। আপনি যদি অন্যকে বলার সুযোগ না দেন তবে আপনি গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই হারাতে পারেন। যা অন্যরা আপনাকে বলতে চেয়েছিল।
নিজেকে পরিবর্তন করুন
বেশিরভাগ লোক নিজেকে পরিবর্তন করতে চায় না। তারা নিজেকে আগের মতই রাখতে চায়। কিন্তু পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে নিজেকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। সব চেয়ে সফল ব্যক্তি হলেন তিনি যিনি সময়ের সাথেসাথে নিজেকে পরিবর্তন করে নিতে পারেন।
কাজ করুন
সাফল্য লাভের কোনও শর্টকাট টেকনিক নেই। আপনাকে কাজ করতে হবে। আপনি যা কিছু করতে চান বা হতে চান তার পিছনে সর্বাধিক সময় দিতে হবে। কখনো অলসভাবে বসে থাকা যাবে না।সফল মানুষেরা শুধু কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। কাজ করলে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাই কাজের বিকল্প শুধু কাজই।
লক্ষ্য ছেড়ে যাবেন না
অনেক মানুষ আছে যারা তাদের লক্ষ্যে পৌছার আগেই হাল ছেড়ে দেয়।তাদের কি আদৌ কোন লক্ষ্য ছিল ? যেকোন কিছুর পিছনে শেষ পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাবেন। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে যাবেন। পরিশ্রমীরা সেগুলোই জিতে নেয় যা সবাই পিছুপা হয়ে রেখে চলে যায়।তাই কোনভাবেই লক্ষ্য ছেড়ে যাবেন না।
2 Comments
Add a Comment